রংপুরে চিকিৎসকদের ধর্মঘটে দুর্ভোগে রোগীরা

রংপুরের সেন্ট্রাল ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের সময় শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার চিকিৎসকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনিদৃষ্টকালের জন্য বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোতে সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসক ও মালিকরা। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। দূর দূরান্ত থেকে ডাক্তার দেখাতে আসা রোগীরা চিকিৎসা সেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পানবাড়ি গ্রামের আকতারুল ইসলাম এসেছেন ডাক্তার দেখাতে। এসে জানতে পারেন ধর্মঘটের বিষয়টি। ফলে ডাক্তার দেখাতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন তিনি।

একই অবস্থা কুড়িগ্রামের শিমুলবাড়ি এলাকা থেকে আসা রইচ উদ্দিনের। যাতায়াত ভাড়া যা গেছে সেটাই তার জন্য কষ্টের বলে তিনি জানান।

রংপুর চিকিৎসক সমাজের আহ্বায়ক ডা. নুররুন্নবী লাইজু জানান, সেন্ট্রাল ক্লিনিকে শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি এখনও তদন্ত করা হয়নি। ভুল অপারেশন হয়েছে কিনা তাও প্রমাণ হয়নি। কিন্তু পুলিশ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে রংপুরের একজন বিশিষ্ট চিকিৎসককে এভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ায় আমরা ক্ষুব্ধ। চিকিৎসক আব্দুল হাইয়ের নিঃশর্ত মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

রংপুর বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনোসিস সমিতির নেতা গুড হেলথ হাসপাতালের মালিক ডা. মামুনুর রশিদ মামুন জানান, সেন্ট্রাল ক্লিনিকে ওই শিশুটি অ্যানেস্থেসিয়া দেয়ার পরই মারা গেছে। তাকে অপারেশন করাই হয়নি। অথচ ডা. আব্দুল হাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাতে চিকিৎসকদের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রশাসন যত দ্রুত তাকে ছেড়ে দেবে আমরা তত দ্রুত রোগীদের সেবায় ফিরে যাব।

এ ব্যাপারে রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফ জানান, সেন্ট্রাল ক্লিনিকে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় মামলার প্রেক্ষিতে ডা. আব্দুল হাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে কোর্টের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

শনিবার দুপুরে টনসিল অপারেশনের জন্য ডা. আব্দুল হাইয়ের তত্ত্বাবধানে নগরীর মেডিকেল মোড় এলাকার সেন্ট্রাল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে গাইবান্ধা সদরের বাসিন্দা রেজ্জাকুল ইসলামের স্ত্রী লাকি ও ৮ বছরের সন্তান সিয়াম ভর্তি হন। অস্ত্রোপচারের সময় শিশু সিয়ামের মৃত্যু হলে রেজ্জাকুল চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। পুলিশ ওই রাতে অভিযুক্ত চিকিৎসক আব্দুল হাইকে গ্রেফতার করে।

এরই প্রেক্ষিতে প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান ও গলা রোগ বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আব্দুল হাইয়ের মুক্তির দাবিতে রোববার দুপুর থেকে রংপুরে কর্মরত সকল চিকিৎসক এবং মালিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন।